স্টাফ রিপোর্টার ঃ
রাজাপুরে একটি মাদ্রাসা সম্প্রসারণের জন্য এক অসহায় বিধবার বসতবাড়ি দখল করে কাটাতারের বেড়া দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে বিধবার পক্ষ থেকে রাজাপুর থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঝালকাঠি প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এসব অভিযোগ করেন রাজাপুর উপজেলার আঙ্গারিয়া গ্রামের মৃত আবুল কালামের স্ত্রী তাসলিমা বেগম। গত ৩০ অক্টোবর গভীররাতে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের ঘটনাটি ঘটে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তাসলিমা বেগম অভিযোগ করেন, ২০/২২ বছর পূর্বে তার স্বামী মারা যান । স্বামীর ক্রয় করা আঙ্গারিয়া মৌজায় ১২ শতাংশ জমির ওপর তারা পুকুর কেটে বসত বাড়ি তৈরি করে বসবাস করতো । একই জমির ওপর তাদের পারিবারিক কবরস্থান যেখানে স্বামী আবুল কালাম ও ছোট মেয়ের কবর রয়েছে। স্থানীয় আঙ্গারিয়া আলীম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ফরিদ তালুকদার ও তার দুই ছেলে মাদ্রাসার প্রভাষক আমিনুল ইসলাম, নাসির তালুকদার মিলে তাসলিমা বেগম ও তার ছেলে মেয়েদেরকে উক্ত ১২ শতাংশ জমি থেকে উচ্ছেদ করতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র শুরু করে। স্বামী আবুল কালাম জীবিত থাকা অবস্থায় আঙ্গারিয়া মাদরাসায় জুনিয়র শিক্ষক হিসেবে চাকুরি করতেন তাসলিমা। স্বামীর মৃত্যুর পর তাসলিমাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়। ২০১৯ সালে সন্ত্রাসী ভাড়া করে একাধিকবার বাড়ি থেকে উচ্ছেদের জন্য হামলা করা হয়। ফরিদ তালুকদার ও তার ছেলেদের হাত থেকে তাসলিমার একমাত্র ছেলে আব্দুর রহমানকে ঝালকাঠিতে রেখে লেখাপড়া করানো হয়। তাসলিমা বেগম অভিযোগ করেন, আমাদের বসত বাড়ির ১২ শতাংশ জমি যে কোনভাবে নিজেদের নামে নিতে ব্যর্থ হয়ে গত ৩০ অক্টোবর রাত একটা দেড়টার দিকে আমিনুল ইসলাম ও নাসির তালুকদারের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জনের একদল সন্ত্রাসী আমাদের বসত ঘরে হামলা করে ভাঙচুর করে এবং আসবাবপত্র ভেঙে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করে এবং আমাকে মারধর করে ও আমার মেয়েদের শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। তাসলিমা কেগম আরও অভিযোগ করে বলেন, আমি হামলা ও ভাঙচুর-উচ্ছেদের বিষয়ে ৩১ অক্টোবর রাজাপুর থানায় একখানা অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ আমাদের কোনো সহযোগিতা করেনি। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে তাসলিমা বেগম এখন অন্যের বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছে। দখলদাররা তাসলিমার বসতবাড়ির সীমানায় তারকাটা দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছে। সেখানে মাদরাসা সম্প্রসারণ করা হবে। তাসলিমা ও তাঁর পাঁচ সন্তান বসতবাড়ি ফিরে পেতে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। তাসলিমা বেগমের অভিযোগের বিষয়ে রাজাপুর আঙ্গারিয়া আলীম মাদরাসার আরবীর প্রভাষক মো. আমিনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, তাসলিমা বেগমের অভিযোগ সত্য নয়। মাদরাসার কাছে আমাদের ক্রয় করা ৬ শতাংশ জমি রয়েছে, সেটা এতদিন খালি ছিল সেখানে আমরা বেড়া দিয়েছি। আমাদের জমিতে আমরা বেড়া দিয়েছি, কারো বাড়িঘর আমরা ভাঙচুর করিনি বা দখল করিনি।
Leave a Reply