স্টাফ রিপোর্টার ঃ
ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে কার্যাদেশ ছাড়া ঠিকাদারের সাথে যোগসাজশে কাজ করিয়ে বিল প্রদান। একই মালামাল ক্রয় ও বহনে পৃথক দুটি নোটিশে ঠিকাদারের সাথে চুক্তিতে ৯ লাখ টাকার ব্যবধান রয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী শামীমা ইয়াসমিনের স্বেচ্ছাচারিতা ও এসব দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ঝালকাঠি সংবাদপত্র পরিষদ নেতৃবৃন্দ প্রথমে জেলা প্রশাসকের কাছে এসব দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে জনস্বার্থে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে গত বৃহস্পতিবার প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অবহিতকরণ চিঠি প্রদান করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, জরুরী রুটিন মেইনটেন্যান্স ব্যতীত ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন বিটুমিনের কাজ না করার জন্য সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু নির্দেশনা উপেক্ষা করে নির্বাহী প্রকৌশলী বেগম শামিমা ইয়াসমিন ও ঠিকাদার মুহাম্মদ আমিনুল হক যোগসাজশে পিএমপি মাইনর খাতের দপদপিয়া-মোল্লারহাট-মহেশপুর রাস্তার ৯ম অংশ হতে ১০ম অংশ পর্যন্ত বেইস টাইপ-২ ও সিল কোটের কাজ নিয়ম বহির্ভূতভাবে মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেয়া নির্ধারিত সময়সীমার বাইরে গিয়ে ১৫ জুনের পরে সম্পন্ন করেছেন। উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী চলতি বছরের গত ২৫ জুন ৬৩৫ নং স্মারকে নির্বাহী প্রকৌশলীকে দেয়া পত্রে জানিয়েছেন, বিধি বহির্ভূতভাবে ঠিকাদার কাজটি কার্যাদেশ ছাড়াই এবং উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীকে না জানিয়ে করা হয়েছে। তাই এই কাজের বিল দাখিলের জন্য রেকর্ডে স্বাক্ষরসহ প্রস্তাব প্রেরণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীকে বাইপাস করে ঠিকাদারের উক্ত কাজের ৪৫ লক্ষ টাকার বিল পরিশোধ করেছেন। নির্বাহী প্রকৗশলী শামীমা ইয়াসমিন নিজেই সরকারি নির্দেশনা অমান্য এবং দাপ্তরিক বিধি ভঙ্গ করে এ কাজে সম্পূর্ণ অনিয়ম করেছেন। অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীকে আড়াল করে এ কাজ করেছেন। গত অর্থ বছরের রাজাপুরে স্টক ইয়ার্ডে ঠিকাদার মো. এনায়েত হোসেনকে ৩০% লেস দিয়ে পি. জে ব্রিক্স, স্টোন চিপস, সিলেট বালু, এবং লোকাল বালু সাপ্লাইয়ের কাজ দেয়া হয়েছে। ২০ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ব্যয়ে এ কাজ দেয়া হয়। যার স্মারক নং-৪৯৩/১(৫) তারিখঃ ১৬/৪/২০। অপর এক কার্যাদেশে (স্মারক নং ৫৭১/১(৮) তারিখঃ ১২/৫/২০) ঝালকাঠির স্টক ইয়ার্ডে একই ধরনের মালামাল মাত্র ১% লেস দিয়ে সম্পা কনস্ট্রাকশনকে কাজ দেয়া হয়। এ কাজে ২৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ব্যয়ের কথা বলা হয়েছে। একই মালামাল দুই স্থানে সাপ্লাইয়ে ৯ লক্ষ টাকার পার্থক্য রয়েছে। ঝালকাঠি সংবাদপত্র পরিষদের আহŸায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন মন্জু জানান, সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন জাগে একই ধরনের দুটি কাজে ৯ লাখ টাকার ব্যবধান এবং পার্সেন্টিজে ২৯% ব্যবধানে কাজ করা হয়েছে। সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের কাজে অনিয়ম, অস্বচ্ছতা, দুর্নীতির কারণে সরকারি অর্থের লোপাট এবং জনগণের সেবা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাই ঝালকাঠি সংবাদপত্র পরিষদ বিষয়গুলো দৃষ্টিতে নিয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে।
Leave a Reply