রাহাদ সুমন:
বরিশালের বানারীপাড়ায় গৃহবধু মাহমুদা (২৮)হত্যা মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে বাদী ও তার পিতাকে হত্যা চেষ্টা ও বাড়ি ঘর ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে অসহায় ওই পরিবারটি চরম আতঙ্কের মাঝে নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছেন। এ ব্যাপারে বানারীপাড়া থানায় মামলার বাদী সবুজ তার ও পরিবারের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরী করেছেন। জানা গেছে উপজেলার ইলুহার ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড মধ্য ইলুহার গ্রামের আলোচিত গৃহবধু মাহমুদা হত্যা মামলার ৫ আসামীকে ৯ জুন গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টায় বানারীপাড়া পৌর শহরের বাসষ্ট্যান্ড এলাকা থেকে বানারীপাড়া থানার ওসি শিশির কুমার পাল ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জাফর আহম্মেদের নেতৃত্বে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী গাফ্ফার হাওলাদার(৫৫),তার স্ত্রী দোলেনা বেগম(৪৫),তার তিন ছেলে ফোরকান (২৬),ফরিদ(২৪) ও শাকিল(১৯)কে গ্রেফতার করে। পরে ১৮ জুন আসামী গাফ্ফার হাওলাদার(৫৫),তার স্ত্রী দোলেনা বেগম(৪৫) ও ছোট ছেলে শাকিল(১৯) জামিনে বের হন। গত ২৭ জুন শনিবার রাত ১টার দিকে জামিনে থাকা আসামীদের নেতৃত্বে অজ্ঞাত লোকজন হত্যা মামলার বাদী সবুজের বাড়িতে গিয়ে তাকে ও তার পিতা তোতা মিয়াকে নাম ধরে ডেকে খুঁজতে থাকে। এক পর্যয়ে তারা ঘরের বেড়া ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে বাদীর পরিবারের লোকজন ডাকচিৎকার দেয়। এসময় বাড়ির অন্য ঘরের লোকজন এগিয়ে এলে আসামীরা বাদী সবুজ ও তার পিতা তোতা মিয়াকে মামলা তুলে না নিলে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। এদিকে এর আগের দিন ২৬ জুন শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইলুহার গ্রামের বাবুলের দোকানের পশ্চিম পাশের রাস্তায় বাদী সবুজকে একা পেয়ে আসামী ফোরকানের মামা মনির মামলা তুলে নিতে নানা হুমকি ধামকি দেয়। এ দুটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে হত্যা মামলার বাদী সবুজ রবিবার সকালে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন।এর প্রেক্ষিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জাফর আহম্মেদ ২৯ জুন সোমবার বিকালে বিষয়টি তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে যান। প্রসঙ্গত উপজেলার মধ্য ইলুহার গ্রামের তোতা মিয়া হাওলাদার ও তার চাচাতো ভাই গাফ্ফার হাওলাদারের পরিবারের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো। এর জের ধরে ২৫ এপ্রিল দুপুরে দু’পক্ষের মধ্যে ঝগড়ার এক পর্যায়ে আসামীরা তোতা মিয়া হাওলাদার(৬৫),তার স্ত্রী হাফিজা বেগম(৫৫) ও বেড়াতে আসা তাদের মেয়ে মাহমুদাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পরে মাহমুদা বেগমকে আশংকাজনক অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখান থেকে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করার পর চিকিৎসাধিন অবস্থায় ২৮ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সে মারা যায়। ওই হাসপাতালে তার লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পরে বানারীপাড়ায় মধ্য ইলুহার গ্রামে দাফন করা হয়। এ ব্যপারে নিহত ওই গৃহবধুর ভাই সবুজ বাদী হয়ে চাচা গাফ্ফার হাওলাদার, চাচি দোলেনা বেগম(৪৫),তিন সহোদর চাচাতো ভাই ফোরকান (২৬),ফরিদ(২৪)ও শাকিল(১৯) কে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বানারীপাড়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জাফর আহম্মেদ বলেন অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেছি।বাদী ও তার পরিবারের নিরাপত্তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply